1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. বিনোদন
  6. তথ্যপ্রযুক্তি
  7. সারাদেশ
  8. ক্যাম্পাস
  9. গণমাধ্যম
  10. ভিডিও গ্যালারী
  11. ফটোগ্যালারী
  12. আমাদের পরিবার
ঢাকা , রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ , ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতাল ঘেরাও

মশিউর রহমান
আপলোড সময় : ৩১-১২-২০২৪ ০৮:০৩:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ৩১-১২-২০২৪ ০৮:০৩:৪২ অপরাহ্ন
দুর্গাপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতাল ঘেরাও ছবি: দৈনিক সোনালী রাজশাহী
দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুরে বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত মা ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চালিয়েছে স্বজনেরা। খবর পেয়ে টহলরত সেনাবাহিনীর একটি টিম ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
 
 
গত রোববার (৩০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে উপজেলা সদরের শালঘরিয়া রোডে অবস্থিত মা ও শিশু হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া ওই প্রসূতির নাম রোকসানা বেগম (২২)। তিনি উপজেলার দেবীপুর গ্রামের আবু হানিফের স্ত্রী।
 
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর প্রসূতির স্বজনেরা হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের কয়েক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় প্রসূতির মরদেহ বহনকারী গাড়ি হাসপাতালের মূল ফটকে রেখে অবস্থান নেন স্বজনেরা।
​​
খবর পেয়ে পুলিশ ও টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 
 
প্রসূতি রোকসানার স্বামী আবু হানিফ জানান, রোববার রাত ১১ টার দিকে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ মিল্টন সহ কয়েকজন ছিলো। তাদের  দেখানোর পরপরই চিকিৎসকরা স্ত্রী রোকসানাকে হাসপাতালে ভর্তির কথা বলে দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলে জানায়।
 
আবু হানিফ অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকের কথামতো তিনি তার স্ত্রীকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান। হঠাৎ করে রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক জানান তার স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। পরে মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর পথে রওনা হন। তবে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার আগেই অর্থাৎ ওটি রুমে তার স্ত্রীর শরীরে একটি ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল। তার স্ত্রীর নড়াচড়াও ছিল না। ওটি রুমেই তার স্ত্রী মারা গেছে।ঘটনা ধামাচাপা দিতে পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মাইক্রোবাসেও আকস্মিক আগুনের ধোঁয়া উঠা শুরু করে।
 
আবু হানিফের অভিযোগ, মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরা বাঁচতে আমার মৃত স্ত্রীকে রাজশাহীতে পাঠানোর পরামর্শ দেয়।
 
রোকসানার শাশুড়ি হালিমা বেগম বলেন, আমার পুত্রবধূকে শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছিলাম। দেড়ঘণ্টা পর জানতে পারলাম পুত্রবধূ মারা গেছে। বাড়ি থেকে সুস্থ মানুষ নিয়ে গেলাম হাসপাতালে। আর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। এটা কেমন হাসপাতাল? যেখানে সুস্থ মানুষ নিয়ে গিয়ে লাশ নিয়ে ফিরতে হয়!
 
প্রসূতি রোকসানার নানা কামাল বলেন, আমার নাতনি তো মারা গেছে ডাক্তারের অবহেলায় ও ভুল চিকিৎসায়। এটা হাসপাতাল না কসাইখানা। এই কসাইখানার বিচার করতে হবে।
 
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার মিল্টন ও ডাক্তার রহিমা মা ও শিশু হাসপাতালে পার্ট টাইম চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। ঘটনার সময় রাতেও ডাক্তার রহিমা ও ডাক্তার মিল্টন মা শিশু হাসপাতালেই ছিলেন। তাদেরই অপারেশন করার কথা ছিলো। তবে চেতনানাশক ইঞ্জেকশন দেয়ার পরপরই প্রসূতি রোকসানা মারা যায়। তবে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে একটি চক্র। মোটা অংকের টাকায় দফারফা হয়েছে বলেও জানা গেছে।  
 
এ বিষয়ে জানতে মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপককে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি কল ধরেননি।
 
হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন জানান, প্রসূতি রোগীটি এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য  নিয়ে আসার পর ওনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে  তাৎক্ষণিক রাজশাহী হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে শুনেছি মারাগেছে। হঠাৎ রাতে এসে মাইক্রোবাসে করে লাশ নিয়ে হাজির হয়ে হাসপাতালে অবরোধ করে। আমাদের হাসপাতাল কোনোভাবেই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী নয়।
 
অভিযোগের বিষয়ে ডা. মিল্টন এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা: রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি রাতেই শুনেছি। স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেননি।  

দৈনিক সোনালী রাজশাহী / মশিউর রহমান 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Daily Sonali Rajshahi

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ